ইসরায়েল দাবি করে, তারা মাটির নিচের ১৫০টি অবস্থানে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে। তবে তাদের এই দাবি যৌক্তিক নয় বলেই মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক। তাদের মতে, ইসরায়েল সম্ভবত সুড়ঙ্গের উপর ১৫০ ভবনে হামলা চালিয়েছে—১৫০ সুড়ঙ্গে হামলা চালানো এত সহজ হওয়ার কথা নয়।

হামাস যখন মাটির নিচে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শুরু করে, তখন সেই সুড়ঙ্গগুলো খুবই প্রাথমিক পর্যায়ের ছিল। সেগুলো মাটির নিচে মাত্র কয়েক মিটার গভীর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। কিন্তু এখন তাদের আছে সর্বোচ্চ ২০ মিটার গভীর সুড়ঙ্গ। সেগুলোয় ব্যবহার করা হয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি, উদ্ভাবনী প্রকৌশল প্রক্রিয়া ও কংক্রিটের মতো মজবুত উপকরণ।

এত গভীর সুড়ঙ্গ খুঁড়তে যথেষ্ট প্রকৌশলগত দক্ষতা ও জনবলের প্রয়োজন। তা সত্ত্বেও হামাস তা করেছে, কারণ এর ফলে সহজেই ইসরায়েল সীমান্তের বাধাগুলোকে এড়িয়ে যাওয়া যায়—যার মধ্যে আছে উঁচু কংক্রিটের প্রাচীর, যা মাটির নিচে ৮ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। কিন্তু আরও গভীরে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে হামাস বাড়তি সুবিধা আদায় করেছে এবং কার্যত এই সুড়ঙ্গপথ ইসরায়েলের বোমা থেকে বেশ নিরাপদ।

এখন পর্যন্ত ইসরায়েল যেসব বোমা ব্যবহার করছে, তা মাটির খুব বেশি ভেতরে পৌঁছাতে করতে পারে না। এক মিটারের বেশি গভীরে আছে এমন যেকোনো কিছুই এসব বোমা থেকে নিরাপদ। আরও নিচে থাকা লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করতে প্রয়োজন বিশেষ ধরনের বোমা।

বিশ্লেষকদের মতে, বাঙ্কার ব্লাস্টার বোমা বলে যে সরঞ্জাম সামরিক বাহিনীর হাতে আছে তা গাজার ক্ষেত্রে তেমন কাজে লাগবে না। ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের ভূগর্ভস্থ সুবিশাল বাঙ্কারগুলো ধ্বংস করতে এগুলো তৈরি করা হয়। তবে এ ক্ষেত্রে  হামাসের গভীর সুড়ঙ্গপথের গুরুত্বপূর্ণ অংশ চিহ্নিত করে সেখানে হামলা চালানোর বিষয়টি শুধু জটিলই নয়, ব্যয়বহুলও হবে। প্রতিটি বোমার দাম ১০ লাখ ডলারেরও বেশি—এ ধরনের হাজারো বোমা মেরেও হয়তো হামাসের তেমন কোনো ক্ষতিই করতে পারবে না ইসরায়েল!

গত চার দিনের হামলা থেকে বিষয়টি পরিষ্কার যে, এখনো ইসরায়েল এমন কোনো বড় আকারের কৌশলগত সুবিধা বা উদ্যোগ নিতে পারেনি যা থেকে নিশ্চিতভাবে বলা যাবে যে তারা স্থল যুদ্ধে হামাসের বিরুদ্ধে জয়ী হবে।